Trouble with Bangla Script viewing ?!

Bangla Font problem? click here to get unicode font support. http://www.omicronlab.com/avro-keyboard.html

aamra animation

Sunday, 15 December 2013

আধার কার্ড কি সত্যিই প্রয়োজনীয়? Is Adhar Card Necessary?



আধার কার্ড কি সত্যিই প্রয়োজনীয়?
১২ই সেপ্টেম্বর ২০১৩, খবরের কাগজে বেরোয়-১লা নভেম্বর থেকে কলকাতা, হাওড়া ও কোচবিহারে রান্নার গ্যাসের ভর্তুকির টাকা সরাসরি গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। তার জন্য 'আধার কার্ড' থাকা দরকার।


২রা নভেম্বর কাগজে বেরোয় যতদিন না 'আধার' হচ্ছে ততদিন গ্যাসে ভর্তুকি 'আধার' ছাড়াই পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে এটাও খবরের কাগজে বেরোয় যে, প্রাক্তন বিচারপতি পুট্টুস্বামীর এক রায়ের ভিত্তিতে সুপ্রীম কোর্ট অন্তর্বর্তী কালীন আদেশ দিয়েছেন যে 'আধার' গ্যাসের ভর্তুকির জন্য বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু ঘটনা চক্রে দেখা যায়, গ্যাস কোম্পানী আর পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক জানায় 'আধার' কার্ড না থাকলে গ্যাসের ভর্তুকি ৩১শে জানুয়ারি ২০১৪-র পর আর দেওয়া হবে না। মাঝে তাই সিদ্ধান্ত হয়,গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটারের কাছেই 'আধার কার্ড' তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু এই লেখা যখন হচ্ছে তখনও এটা চালু হয়নি দেখা যাচ্ছে। তবে হুগলি জেলায় এই কার্ড প্রথমে চালু করে, এর মাধ্যমে গ্যাসের ভর্তুকি দেবার কথা চলছে।
আধার কি-

ইউ আই ডি প্রোজেক্ট, যা 'আধার' নামে পরিচিত, এটার উৎপত্তি ২০০৯ সালে। ইউ আই ডি কর্তৃপক্ষের কথা অনুযায়ী, এটা 'আধার' এপিক কার্ড বা প্যান কার্ডের মতো কোন পরিচয় জ্ঞাপক কার্ড নয়, বা জব কার্ডের মতো নয়, এটি আসলে একটি ১২ অঙ্কের একটি নাম্বার, যার সাথে কোন ব্যক্তি যদি অন্যান্য সমস্ত তথ্য(যথা,অ্যাকাউন্ট নম্বর,জব কার্ড,এপিক কার্ড,প্যান কার্ড,র‍্যাশন কার্ড ইত্যাদি) লিংক করে দেন তাহলে পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে, অনেক স্বচ্ছভাবে পরিষেবা প্রদান সম্ভবপর হবে। ইউ আই ডি কর্তৃপক্ষ (UIDAI) এটাকে দেশব্যাপী চালু করতে চান। ২০১০ সালের দিকে কথা ছিল, এখানে কেন্দ্র ৪৫০০০ কোটি টাকা আগামি ৪বছরে ঢালবে। যার মধ্যে তখনই ৩০০০ কোটি টাকা স্যাংশন ছিল,পার্লামেন্টের কোন অনুমতি ছাড়াই। আর এটার সম্বন্ধে বলা হয়েছে, এটা একটা কোম্পানী যা কিনা লাভজনক, কিন্তু অধিক মুনাফার লক্ষ্যে চালিত নয়। 

আধার নম্বরের ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়?

·         গোটা দেশ জুড়ে এত বড় একটা প্রজেক্ট কার্যকরী করার প্রচেষ্টা চলছে অথচ,এটা সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন গুলোর সাথে আলোচনা না করেই করা হল।
·         এটা এত গুরুত্বপুর্ণ একটা প্রজেক্ট, কিন্তু কোন ফিজিবিলিটি স্টাডি( বাস্তব কার্যকারিতা ) করা হয় নি। যদিও এটা ইউ আই ডি কর্তৃপক্ষের কাছে নিশ্চই অজানা নয় যে, ফিলিপিনস সুপ্রীম কোর্টে এই একই ধরনের একটি প্রজেক্ট বাতিল বলে ঘোষিত হয়েছে।
·         এই প্রজেক্টের লাভ-লোকসান হিসেব যথেষ্ট পরিস্কার নয়। ৪৫০০০ কোটি টাকা সরকার এখানে ঢালবে অথচ তাতে সরকারী কোষাগারে কত কোটি টাকা আসবে তা পরিস্কার নয়।
·         যে সমস্ত তথ্য এই নম্বরের সাথে জোড়া হবে, তা কিভাবে সুরক্ষিত থাকবে সে প্রসঙ্গে ইউ আই ডি কর্তৃপক্ষের কথা পরিস্কার নয়। তথ্য চুরি যে যাবে না, এমন কথা কি কেউ হলপ দিয়ে বলতে পারে? কারণ এই গোটা প্রক্রিয়া এখনও পার্লামেন্টের অনুমোদন পায় নি। ফলে, এর তথ্য ব্যবহার সংক্রান্ত কোন গাইডলাইন নেই, এমনকি এই তথ্য চুরি গেলে বা কোন প্রাইভেট করপোরেশন ভুল ভাবে ব্যবহার করলে তার জন্য নাগরিকের হাতে কোন আইনি রক্ষাকবচ নেই।সংসদের এই সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি ইতিমধ্যে এটাকে-“unethical and violation of Parliament’s prerogatives” বলেছে।
 
বলা হচ্ছে এই কার্ডের জন্য চোখের মনির মাপ নেবার কথা। কিন্তু, ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী তা নাগরিকের ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারকে ক্ষুন্ন করে থাকে।
ইতিমধ্যে যতই ইউ আই ডি কর্তৃপক্ষ বলুন যে, একবার আইরিস-এর মাপ নিলেই সব কিছু ঠিক থাকবে,কিন্তু ঘটনা হল আইরিস-এর মাপ বদলাতে থাকে সময়ের সাথে।যারা কঠিণ পরিশ্রমের কাজ করে থাকেন থাকেন তাদের আঙুলের ছাপ পরিস্কার থাকে না। সুতরাং এই বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মানুষ চিহ্নিত করার পদ্ধতি নির্ভর যোগ্য পদ্ধতি নয়।

এই ডাটাবেস তৈরীর কাজ L1 Identity solution আর Accenture Services Pvt Ltd নামক দুটি বিদেশী কোম্পানীকে দিয়ে করাচ্ছেন, অথচ এদের এই কাজের বিষয়ে যখন RTI আইনে প্রশ্ন করা হয়েছে তার যথাযথ উত্তর পাওয়া যায় নি।
অথচ ইতিমধ্যে যেটা দেখা যাচ্ছে, এই ইউ আই ডি অথরিটি একথা বোঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন যে এটা আসলে, গরীব মানুষের ভালোর জন্যই করা হচ্ছে। আর এই অথরিটি প্ল্যানিং কমিশনের সৃষ্ট, যারা কিনা বলেন, এই মাগগি গন্ডার বাজারে শহরে সারা দিনে ৩২ টাকায় আর গ্রামে ২৬ টাকায় জীবনধারন সম্ভব।

এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে এটা নিয়ে মামলা চলছে, আর কেন্দ্র সরকার একতরফা ভাবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার দিকে এগোচ্ছে। রাজ্য সরকার গুলিও এই 'আধার নম্বর' চালু করার বিষয়ে একমত নয়। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভায় নিয়ম ১৬৯ অনুযায়ী দলমত নির্বিশেষে সিধান্ত নেওয়া হয়েছে-রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারে(৯টি) ভর্তুকি প্রাপ্তির জন্য আধার আবশ্যক- কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত জনস্বার্থ বিরোধী।

এই পরিস্থিতিতে আগামী ১৬-ই ডিসেম্বর'২০১৩ বিকেল ৫ টায়, ১৮ নং সূর্য সেন স্ট্রীটে এই বিষয়ে কর্মপন্থা স্থির করার উদ্দেশ্যে একসাথে বসে কথা বলার জন্য ব্যক্তি,সংগঠন ,সহ- নাগরিকদের আহবান জানানো হচ্ছে।

No comments:

Post a Comment